ঝিঙ্গা পরিচিতি
ঝিঙ্গা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। সবজি হিসাবে খাবারের জন্য কচি অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়। এই সবজি চীন ও ভিয়েতনামের অতি জনপ্রিয়। ঝিঙ্গা হলো বর্ষজীবী লতাগাছ, গাছের মসৃণ গাঁট থেকে নতুন কান্ড বের হয় ও পরিনত সময়ে ফুল ও ফল হয়। সাধারনত লতাটি বেড়ায় গায়ে, মাচায় ও অন্য গাছকে আশ্রয় করে প্রসারিত হয়ে থাকে। লাউ কুমড়োর মত ঝিঙ্গারও দুই রকমের ফুল হয়। এর ফুল হলুদ রঙের হয়ে থাকে। সন্ধ্যার আগে ফুল ফোটে। সবুজ রঙের সব্জি বোঁটার দিক থেকে চিকন হয়ে আস্তে আস্তে মোটা হতে থাকে এবং সব্জিটি দেখতে শিরসম্পন্ন, এজন্য এর নাম ধারা কোষাতকী। সবজির ভিতরে প্রকোষ্ঠগুলি দেখতে যেন জাল বুনে তৈরী, সেটা দেখা যায় ফল পাকলে। প্রকোষ্ঠের মধ্যে অনেকগুলি বীজ থাকে। এগুলি দেখতে অনেকটা ডিম্বাকৃতি ও চেপ্টা। ঝিঙ্গার বাজার দর ও চাহিদা অনেক বেশি।
PICTURE:-RAYHAN
LOCATION:-DAMSHUR,VALUKA,MYMONSHINGH
ঝিঙ্গার বৈজ্ঞানিক নামঃ
Luffineaঝিঙ্গার ইংরেজি নামঃ
Luffaঝিঙ্গার জাতঃ
একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বর্গ এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় লতাজাতীয় উদ্ভিদ যা কিউকুয়াবিটাশা পরিবারে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। ঝিঙা সাধারণত দুই প্রজাতির হয়, যথা, luffa aegyptiaca এবং luffa acutangula। ঝিংগার অন্যতম জাত হলো বারি ঝিংগা -১। আকর্ষণীয় গাঢ় সবুজ রংয়ের ফল। লম্বা গড়ে ২৭ সেমি, ওজন ১২৫ গ্রাম। হেক্টর প্রতি ফলন ১০-১৫ টন। ২০০৮ সালে অবমুক্ত।ঝিঙ্গার খাদ্য উপাদানঃ
ঝিংগায় রিবোফ্ল্যাভিন, জিঙ্ক, লোহা, থায়ামিন, ম্যাগনেশিয়াম ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।১০০ গ্রাম ঝিঙ্গায় আছেঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশের মধ্যে রয়েছে ০.৫ গ্রাম প্রোটিন, ৩৩.৬ মাইক্রো গ্রাম বিটা-ক্যারোটিন, ৫ মিগ্রা ভিটামিন সি, ১৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ২৭ মিলিগ্রাম ফসফরাস।ঝিঙ্গার ঔষধি গুনগুনঃ
1.ঝিঙে সবজি শীতল মধুর খাবার। পেটের খিদে বাড়ায়, হাপানি জ্বর, কাশি, বমি উপশম করে। পেট পরিস্কার করে দেহকে সুস্থ রাখে।2. ঝিঙা খাবার গ্রহণের ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
3. ভিটামিন সি রক্তের বিশুদ্ধতা চামড়ার সৌন্দর্য, চর্মরোগ, দাঁতের মাড়ি নানা রোগ ও এন্টিঅক্সিডেন্টকে শক্তিশালী করে।
4.ঝিঙাতে থাকা ফোলেট হৃদরোগ বা হার্ট অ্যটাক প্রতিরোধ করে।
5. ঝিঙায় আঁশ থাকায় সহজে হজম হয় এবং কোষ্টকঠিন্য দূর করে।
6. যারা গ্যাষ্টিকে ভ‚গছেন তারা ঝিঙে খান উপকার পাবেন। ঝিঙাতে ভিটামিন ই থাকা এটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
7. রক্তের বিদ্যমান এলডিএল লো-ডেনসিটি লাইপ্রোটিন) নামের একপ্রকার ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়। হৃদরোগ ও ষ্টোকের জন্য দায়ী রক্তনালীতে এথোরোস্কেলেরোসিস প্রতিরোধ করে।
8.মহিলাদের সন্তান ধারণ ক্ষমতা ও পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
9.শরীরে বয়সের চাপ পড়তে দেয় না। ফলে তারুণ্য বজায় থাকে।
10. তেতো ঝিঙে কৃমি ও অর্শ রোগে বেশ উপকার সাধন করে।
11.শরীরের কোনো অংশে ঘা হলে তেতো ঝিঙের রস লাগালে ঘা কমে যাবে।