শালগম পরিচিতি
শালগম একটি পুষ্টিকর শীতকালীন সবজি। এটা এক প্রকার রূপান্তরিত মূল এবং মাটির নিচের অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শীতের সময় এই সবজিটি বেশ চোখে পড়ে। সহজলভ্য এই সবজিটি পুষ্টিগুণে ভরপুর।
শালগম এর বৈজ্ঞানিক নাম
Brassica Rapa var. Rapaশালগম এর ইংরেজি নাম
Turnipশালগম এর জাত
শালগম এরা Brassicaceae পরিবারের সদস্য।শালগম এর খাদ্য উপাদানঃ
শালগম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। সাধারণত শীতকালের এই সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় যা অত্যন্ত পুষ্টিকর।১০০ গ্রাম শালগমতে আছেঃ-
উপাদান
|
পরিমাণ
|
আমিষ
|
০.৫
গ্রাম
|
শর্করা
|
৬.২
গ্রাম
|
আশ
|
০.৯
গ্রাম
|
চর্বি
|
০.২
গ্রাম
|
শক্তি
|
২৯
কিলোক্যালরি
|
ক্যালসিয়াম
|
৩০
মিলিগ্রাম
|
ফসফরাস
|
৪০
মিলিগ্রাম
|
ভিটামিন
‘সি
|
৪৩
মিলিগ্রাম
|
শালগম ঔষধি গুনাগুনঃ-
১.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
যদি ঘন ঘন ঠান্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে আপনার তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায় শালগম যোগ করুন। এটি আপনার ইমিউনিটিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করবে। শালগম পুষ্টি উপাদান ও ফ্ল্যাভনয়েডে সমৃদ্ধ বলে স্বাস্থ্যকর মেমব্রেন এর বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।২.খারাপ কোলেস্টেরল কমায়ঃ
যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তারা শালগম খেয়ে উপকৃত হতে পারেন। এর কারণ শালগম পাকস্থলীতে অনেক বেশি পিত্তরস শোষণ করতে পারে যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এভাবেই কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে শালগম।৩.ব্লাডপ্রেসার কমায়ঃ
২০১৩ সালে ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি নামক ব্রিটিশ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, শালগম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। শালগম পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ বলে ধমনীকে প্রশস্ত করে এবং শরীর থেকে সোডিয়াম বাহির করে দেয়। দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য শালগম।৪.হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়ঃ
ভিটামিন ও পটাসিয়াম ছাড়াও শালগম ক্যালসিয়ামেও সমৃদ্ধ বলে হাড়ের জন্য উপকারী। সুস্থ ও শক্তিশালী হাড়ের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় শালগম যুক্ত করুন।৫.পরিপাকের উন্নতি ঘটায়ঃ
শালগমে প্রচুর ফাইবার থাকে বলে হজমে সাহায্য করে। যদি আপনার হালকা কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা থাকে তাহলে শালগম এই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে।৬.রক্তজমাট বাঁধাতে সাহায্য করেঃ
শালগম ভিটামিন কে এর চমৎকার উৎস যা সঠিকভাবে রক্তজমাট বাঁধার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক। ক্যালসিয়ামকে প্রসেস করা ও ধমনীর স্বাস্থ্যের জন্যও ভিটামিন কে প্রয়োজনীয়। ধমনীর শক্ত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে ভিটামিন কে।৭.দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়ঃ
ইমিউন সিস্টেম ঠিকভাবে কাজ করার জন্য এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করার জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজনীয়। শালগম ভিটামিন এ তে ভরপুর থাকে বলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে।৮.অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করেঃ
শালগম ফলিক এসিডে সমৃদ্ধ যা কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে। এই ভিটামিন জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে।৯.আরথ্রাইটিসের বিরুদ্ধে কাজ করেঃ
যারা রিউমাটয়েড আরথ্রাইটেসে ভুগছেন তাদের জন্য উপকারী শালগম খাওয়া। কারণ শালগমে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম ও কপার থাকে যা এই ধরণের আরথ্রাইটেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।শালগম চাষের সময়
বাংলাদেশে কেবল রবি মৌসুমে শালগমের চাষ সম্ভব৷ বৃষ্টির মৌসুম শেষ হবার পর ফসল লাগানো উচিত৷ চারা কচি থাকা অবস্থায় বৃষ্টি হলে ফসল সহজেই নষ্ট হয়৷আর্শ্বিন-কার্তিক (নভেম্বরের প্রথম ভাগ থেকে ডিসেম্বরের শেষ ভাগ) বীজ বোনার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়৷ফসল প্রাপ্তি সময়
এটা শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়।
Info by Akash
No comments
Pleas Do not write bad link