যষ্টিমধু পরিচিতি
যষ্টিমধু হচ্ছে গ্লাইসাইররিজা গ্লাবরা গাছের শিকড়। বাংলায় গাছটিকে যষ্টিমধু গাছ বলা হয়ে থাকে। যষ্টিমধুর শিকড় থেকে মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়। এটি লিগিউম জাতীয় বিরুৎ যা মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন অংশে পাওয়া যায়।মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের অনেক দেশে চকোলেট এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার প্রস্তুতিতে যষ্টিমধু ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যষ্টিমধু বৈজ্ঞানিক নাম
Glycyrrhiza glabraযষ্টিমধু এর ইংরেজি নাম
Liquoriceযষ্টিমধু এর জাত
যষ্টিমধু এরা Fabaceae পরিবারের সদস্য।যষ্টিমধু এর খাদ্য উপাদানঃ
যষ্টিমধুর প্রধান কার্যকর রাসায়নিক উপাদানটি হলো- ট্রাইতারপিনয়েড স্যাপোনিন গ্লিসাইরিজিন (গ্লিসাইরিজিনিক অ্যাসিডের পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম লবণের মিশ্রণ)। এ ছাড়াও এতে রয়েছে গ্লাবরানিন-এ ও বি, গ্লিসাইরেটল, গ্ল্যাবরোলাইড, আইসোগ্ল্যারোলাইড নামে ট্রাইতারপিনয়েড স্যাপেনিন; ফরমোনোনেটিন, গ্ল্যাবরোন, নিওলিকুইরিটিন, হিসপা-গ্ল্যাবরিডিন এ ও বি নামে আইসোফাবন; হারনিয়ারিন, আম্বিলিফেরন নামক কৌমারিন এবং আনোসেরিন, এমাইরিন, স্টিগমাস্টেরল নামক ট্রাইতারপিন স্টেরল ইত্যাদি।যষ্টিমধু ঔষধি গুনাগুনঃ-
১.পেটের সমস্যায় আরাম দেয়বুকজ্বালা, পাকস্থলির আলসার, কোলাইটিস, গ্যাস্ট্রাইটিস, পাকস্থলির ভেতরের স্তরের প্রদাহ ও পরিপাকতন্ত্রের ওপরের স্তরে প্রদাহজনিত অসুস্থতায় যষ্টিমধু ব্যবহার করা হয়, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ডায়েটিশিয়ান জুলি আপটন। যষ্টিমধু হচ্ছে প্রশান্তিদায়ক প্রদাহরোধী, তাই এটি আলসারেটিভ কোলাইটিস বা আন্ত্রিক প্রদাহ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
২.স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে
আপনি প্রায়সময় স্ট্রেস বা মানসিক চাপে আচ্ছন্ন হলে যষ্টিমধু সাহায্য করতে পারে। মলিকিউলার অ্যান্ড সেলুলার এন্ডোক্রিনোলজি নামক মেডিক্যাল জার্নালের প্রতিবেদনে আছে, এটি শরীরকে অধিক কার্যকরভাবে স্ট্রেস হরমোন করটিসল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
৩. শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে
তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার (যেমন- কাশি বা কফ, গলা ব্যথা, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিস) চিকিৎসা হিসেবে যষ্টিমধু ব্যবহার করা যেতে পারে, বলেন রিমেডিস ফর মি ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা রেবেকা পার্ক। ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট উপরিস্থ শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশন প্রশমিত করতে পারে ষষ্ঠিমুধ।
৪. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
যষ্টিমধুতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে এবং এটি ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে। ফুড কেমিস্ট্রি নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যষ্টিমধু শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে ও শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করে।
৫. ত্বককে প্রাণবন্ত করে
আপনি যষ্টিমধুকে অভ্যন্তরীণ অথবা বাহ্যিক যেভাবেই ব্যবহার করেন না কেন, এতে ত্বকের উপকার হয়, বলেন ডা. পার্ক। তিনি যোগ করেন, ‘ষষ্ঠিমধু ত্বকের একজিমা, সোরিয়াসিস, প্রদাহ, সানবার্ন, লালতা ও পায়ের ছত্রাক জনিত অ্যাথলেট’স ফুট নিরাময়ে অবদান রাখে।’
৬. দাঁতের স্বাস্থ্য উন্নত করে
যষ্টিমধু হচ্ছে একটি মাল্টিপারপোজ হার্ব, যা আপনার দাঁত ও মাড়িকেও সুস্থ রাখতে পারে। জার্নাল অব ন্যাচারাল প্রোডাক্টসে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, যষ্টিমধুতে দুটি কার্যকরী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যাকটেরিয়ার গ্রোথ ঠেকাতে পারে।
৭.কাশি কমায়
যষ্টিমধু তরল আকারে কফ বের করে দেয় এবং কাশি ভালো করতে সাহায্য করে। এছাড়া ব্রঙ্কাইটিস, টনসিলাইটিস ও কণ্ঠনালীর প্রদাহ দূর করতেও সাহায্য করে।
৮.টিউমার প্রতিরোধক
যষ্টিমধুতে থাকা গ্লাইসিরাইটিনিক অ্যাসিড টিউমার সৃষ্টিকারী ‘এপস্টাইন বার ভাইরাস’ কার্যকারিতা প্রতিহত করে।
৯.অ্যালার্জি প্রতিরোধক
যষ্টিমধুর গ্লাইসিরাইজিক অ্যাসিড মাস্টকোষ হতে হিস্টামিন নিঃসরণ কমিয়ে অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে।
অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে যষ্টিমধু
গ্লাইসিরাইজিন বিভিন্ন কঠিন রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস বৃদ্ধি ও বংশ বিস্তার রোধ করে।
১০.লিভার সুরক্ষায়
যষ্টিমধুর গ্লাইসিরাইজিন বিষাক্ত পদার্থের কবল থেকে লিভারকোষ সমূহ সুরক্ষা করে।
যষ্টিমধু ফসল প্রাপ্তি সময়
১ থেকে ১.২ মিটার পযর্ন্ত লম্বা হতে পারে। জুন থেকে জুলাই পযর্ন্ত ফুল হয়।
Info by Akash
No comments
Pleas Do not write bad link