তেতুল পরিচিতি
তেঁতুল বৃহৎ ও সুদৃশ্য চিরসবুজ বৃক্ষ। এগাছ প্রায় ২৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের শীর্ষ ছাউনি অনেক এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। তেঁতুল সম্ভবত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকার আদিবাসী, তবে ভারতীয় উপমহাদেশে এত দিন ধরেই এর চাষ করা হচ্ছে যে এটি কখনও কখনও সেখানে আদিবাসী গাছ বলে জানা গেছে।[৫] এটি আফ্রিকার স্থানীয় অঞ্চলে সুদান, ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া, জাম্বিয়া এবং তানজানিয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে বনে জন্মায়।
তেতুল এর বৈজ্ঞানিক নাম
Tamarindus indicaতেতুল এর ইংরেজি নাম
Melanesian papedaতেতুল এর জাত
তেতুল এরা Fabaceae পরিবারের সদস্য।তেতুল এর খাদ্য উপাদানঃ
পাকা তেঁতুল টক-মিষ্টি হয়ে থাকে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যাসিড, চিনি, ভিটামিন বি, এবং ফলে সাধারণত না দেখা গেলেও এতে আছে ক্যালসিয়াম।১০০ গ্রাম তেতুলে আছেঃ-
উপাদান পরিমাণক্যালরি ২৩৯
আমিষ বা প্রোটিন ২.৮
শর্করা ৬২.৫ গ্রাম
ফাইবার ৫.১ গ্রাম
চর্বি ০.৬ গ্রাম
ফসফরাস ০.৩৪ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ৬২৮ মি:লি
ভিটামিন ই ০.১ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম
সেলেনিয়াম ১.৩ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ২৮ মিলিগ্রাম
দস্তা ০.১২ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৯২ মিলিগ্রাম
তামা ০.৮৬ মিলিগ্রাম
তেতুল এর ঔষধি গুনাগুনঃ-
তেঁতুল পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে তরূণীদের খাবারের তালিকায় উপরের দিকেই পাওয়া যায় এর নাম।১. হার্ট ঠিক রাখে:
দেখা গেছে তেঁতুল খুবই হার্ট ফ্রেন্ডলি। এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভরনয়েড ব্যাড কোলেস্টেরল কমায় এবং গুড কোলেস্টেরল বাড়ায়। এছাড়াও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড (এক ধরনের ফ্যাট) জমতে দেয় না। এতে উপস্থিত উচ্চ পটাশিয়াম রক্ত চাপ কম করতে সাহায্য করে।২. হজম শক্তি বাড়ায়‚ কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়ায়:
পেট ব্যথা বা কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা থেকে সমাধান পেতে চাইলে তেঁতুলের সাহায্য নিন। তেঁতুলের মধ্যে টার্টারিক অ্যাসিড‚ ম্যালিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম আছে যা কোষ্ঠন্যকাঠিন্য দূর করে। এখনো আয়ুর্বেদে তেঁতুল পাতা ডায়েরিয়া সারাতে ব্যবহার হয়। এছাড়া তেঁতুল গাছের ছাল এবং শিকড় পেটের ব্যথা সারাতে ব্যবহার করা হয়।৩. ত্বক উজ্জ্বল করে:
প্রমাণ হয়ে গেছে তেঁতুল ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে-র হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে। এছাড়াও যাদের অ্যাকনে আছে তাদের জন্যেও উপকারী তেঁতুল। এছাড়াও তেঁতুলে উপস্থিত হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন করতেও সাহায্য করে যার ফলে মরা কোষ উঠে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।৪. ডায়বেটিস কন্ট্রোল করে:
তেঁতুলের বীজ ডায়বেটিস কন্টোল করতে সক্ষম। এছাড়াও রক্তে চিনির মাত্রাও ঠিক রাখে। এতে উপস্থিত এক ধরনের এনজাইম যার নাম alpha-amylase রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।৫. ক্যান্সার রোধ করে:
তেঁতুলে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা কিডনি ফেলিওর এবং কিডনি ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।৬. ওজন কমায়:
তেঁতুলে উচ্চ মাত্রায় ফাইবার আছে আর একই সঙ্গে এটা সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি। রিসার্চ করে দেখা গেছে রোজ তেঁতুল খেলে ওজন কমে।৭. ক্ষত সারিয়ে তোলে:
তেঁতুল গাছের পাতা এবং ছাল অ্যান্টি সেপটিক এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল‚ ফলে ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।৮. লিভার সুরক্ষিত রাখে:
দেখা গেছে তেঁতুল আমাদের লিভার বা যকৃতকেও ভালো রাখে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে নিয়মিত তেঁতুল পাতা ব্যবহার করে উচ্চ মাত্রায় মদ্যপানের ফলে ড্যামেজড লিভার অনেকটা সেরে উঠেছে।৯. পেপটিক আলসার রোধ করে:
পেপটিক আলসার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পেটে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে হয়। এই আলসার খুবই বেদনাদায়ক। রিসার্চ করে দেখা গেছে তেঁতুলের বীজের গুঁড়ো নিয়মিত খেলে পেপটিক আলসারের সেরে যাচ্ছে। আসলে তেঁতুলে উপস্থিত পলিফেনলিক কম্পাউন্ড আলসার সারিয়ে তোলে বা হতে দেয় না।১০. সর্দি কাশি সারাতে সাহায্য করে :
তেঁতুল অ্যালার্জি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এতে উপস্থিত ভিটামিন সি শরীরের ইমিউনিটি বাড়ায়।তেতুল এর প্রাপ্তি সময়
তেঁতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়।
Info by Akash
No comments
Pleas Do not write bad link